Tuesday, June 27, 2017

নামাযের মধ্যে সূরা ফাতিহা শেষে 'আমীন' চুপে বলা প্রসঙ্গে

  •                                             বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম

                                       পরম করুনময় আল্লাহর নাম সরন করি
                                                   সগ্রহকারি মোঃ রোকন সরকার


নামাযের মধ্যে সূরা ফাতিহা শেষে আমীন বলা সুন্নাত । চার ইমাম ও অন্যান্য ফিক্‌হশাস্ত্রবিদগণ এতে একমত । হানাফী মাযাহাবে চুপে চুপে পড়ার নামায হোক অথবা উচ্চস্বরে পড়ার নামায হোক- ইমাম ও মুক্তাদি অথবা একাকী হোক সর্বাবস্থায় ‘আমীন’ চুপে বলতে হবে । এর কতিপয় দলিল লিপিবদ্ধ করা হলোঃ
১) বুখারী ও তিরমিযীতে বর্ণিত হয়েছেঃ
হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্নিত- রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ যখন ইমাম আমীন বলবে, তখন তোমরাও আমীন বলবে । কেননা, যার ‘আমীন’ বলা ফিরিশতাদের আমীন বলার সাথে যুগপৎভাবে একযোগে হবে, তাঁর পূর্বেকার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে । ইবনে শিহাব বলেছেন, আল্লাহর রাসূলও আমীন বলতেন ।
— আনওয়ারুল মুকাল্লেদীন, কৃত ই,ফা,বা, পৃঃ ৪৯
২) তিরমিযী শরীফে উল্লেখ হয়েছেঃ
হযরত ওয়াইল ইবনে হাজর (রাঃ) হতে বর্নিত- তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সঃ)কে ‘গাইরিল মাগদুবি…” পাঠের পর আমীন বলতে শুনেছি । আর তিনি তা বলার সময় নিজ আওয়াজ দীর্ঘ করেন ।
— জামে তিরমিযী মুতারজম উর্দূ, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৬৯
৩) উক্ত সাহাবী আরও বর্ননা করেনঃ
রাসূল (সঃ) ‘ওয়ালাদ্দ্বল্লীন’ পাঠের পর আস্তে এবং তা দীর্ঘস্বরে (উচ্চস্বরে নয়) অর্থাৎ- নিজের কানে নিজে যেন স্পষ্ট শুনতে পায় ।
— জামে তিরমিযী মুতারজম উর্দূ, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৬৯
৪) তিরমিযীতে আরও উল্লেখ আছেঃ
হযরত আলকামা (রাঃ) হতে বর্নিত আছে- নবী করিম (সঃ) ‘গায়রিল… ওয়ালাদ্দ্বল্লীন’ বলার পর ‘আমীন’ বলেছেন এবং আমীন নিচু স্বরে চুপে চুপে বলেছেন ।
— জামে তিরমিযী মুতারজম উর্দূ, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৬৯
ইমাম আহমদ, আবূ ইয়ালা, ইমাম তাবরানী, দারে কুতনী ও হাকিম মুস্তাদরাক নামক কিতাবে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আলকামা (রাঃ) এর পিতা হযরত ওয়াইল (রাঃ) রাসূলে করীমের সাথে নামায আদায় করেছেন । যখন রাসূলে করীম (সঃ) ‘গায়রিল মাগদুবি আ’লাইহিম…’ পর্যন্ত পৌঁছেছেন, তখন তিনি চুপে চুপে আমীন বলতেন । [1]
৫) বুখারীর শরাহ ‘আঈনী’ গ্রন্থে লিখিত আছেঃ
হযরত ইব্রাহীম নাখঈ হতে বর্ণিত আছে- ইমাম চারটি দোয়া চুপে চুপে বলবে- আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, সুবহানাকা ও আমীন ।
— আনওয়ারুল মুকাল্লেদীন, কৃত ই,ফা,বা, পৃঃ ৫১
৬) হযরত তাবারানী ‘তাহযীবুল আছার’ গ্রন্থে হযরত আবূ ওয়াইল হতে বর্ণনা করেছেন যে,
উমর (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) তারা কেউই আমীন ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম স্বশব্দে বলতেন না ।
— আনওয়ারুল মুকাল্লেদীন, কৃত ই,ফা,বা, পৃঃ ৫১
৭) তাফসীরে কবীরেঃ
তাফসীরে কবীরের ৪র্থ খন্ডে ২৪৩ পৃষ্ঠায় ইমাম রাযী বর্ননা করেছেন, ইমাম আবূ হানিফা (রহঃ) বলেন ‘আমীন’ চুপে চুপে পাঠ করা উত্তম । আর ইমাম শাফিয়ী বলেন, আমীন উচ্চস্বরে পাঠ করা উত্তম । ইমাম আবূ হানিফা নিজ মতের সত্যতা প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে এই দলিল পেশ করেছেন যে, আমীন শব্দে দুই প্রকার মত আছে- ১ম এই যে, সেটা একটি দোয়া, ২য় সেটা আল্লাহ পাকের একটি নাম । যদি আমীন দোয়া হয়, তবে সেটা চুপে চুপে পাঠ করা ওয়াজিব হবে । কেননা আল্লাহপাক বলেছেন-
তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকিট কাতরভাবে ও চুপে চুপে দোয়া কর ।
আর যদি আমীন আল্লাহপাকের একটি নাম হয়, তবে সেটা চুপে চুপে পাঠ করা ওয়াজিব হবে । কেননা, আল্লাহ পাক বলেছেন,
তুমি তোমার প্রতিপালককে, মনে মনে কাতর ও ভীতভাবে ও অনুচ্চস্বরে স্মরণ করো ।
আর যদি তা চুপে চুপে পড়া ওয়াজিব না হয়, তবে অন্তঃত পক্ষে সেটা মুস্তাহাব হবে । আমরা এই মত অবলম্বন করি । [2]
৮) ইমাম আবূ দাউদ, ইমাম তিরমিযী ও ইমাম ইবনে মাজা হযরত ছামুরা বিন জুনদাব (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন,
নিশ্চয়ই তিনি (ছামুরা বিন জুনদাব) হযুরত নবী করীম (সঃ) হতে দুটি (অর্থাৎ দুই স্থানে) চুপ থাকবার কথা স্মরণ রেখেছেন । ১ম- যে সময় তিনি তাকবীরে তাহরীমা অন্তে অন্তে চুপে চুপে ‘ছানা’ পড়তেন । ২য়- যখন তিনি সূরা ফাতিহা পড়া শেষ করতেন, তখন ‘আমীন’ চুপে চুপে পড়তেন । হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) এই হাদিসটিকে সত্যে বলে স্বীকার করেছেন । ইমাম দারেমীও অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ।
— তুহফাতুল মুমিনীন, কৃতঃ মাওঃ শামসুদ্দীন মোহনপুরী, পৃঃ ৯৯
৯) শাফেয়ী মতাবলম্বী ইমাম তিবি বলেছেন,
উপরোক্ত হাদীসে সুস্পষ্টরুপে প্রমাণিত হয়েছে যে, হযরত নবী করীম (সাঃ) প্রথমবার ‘ছানা’ পাঠ করার সময় চুপ করতেন এবং দ্বিতীয়বার আমীন চুপে চুপে বলতেন । -(মিরকাত)
— তুহফাতুল মুমিনীন, কৃতঃ মাওঃ শামসুদ্দীন মোহনপুরী, পৃঃ ৯৯
১০) আবূ দাউদ তায়ালছীতে উল্লেখ আছেঃ
নবী করীম (সাঃ) ফাতিহা শেষ করে চুপে চুপে আমীন পাঠ করতেন ।
— সাইফুল মুকাল্লেদীন, কৃত মাওঃ ইবরাহীম মুহাব্বাতপুরী, পৃঃ ৮৫
১১) তাহাবী, ইবনে শাহীম ও ইবনে জরীর তাবারীতে বর্ণিত আছেঃ
হযরত আবূ ওয়াইল বলেনঃ হযরত উমর ও হযরত আলী বিসমিল্লাহ, আউজু ও আমীন চুপে চুপে পাঠ করতেন ।
— সাইফুল মুকাল্লেদীন, কৃত মাওঃ ইবরাহীম মুহাব্বাতপুরী, পৃঃ ৮৫
১২) নিশ্চয়ই নবী করীম (সাঃ) সূরা ফাতিহা শেষ করে চুপে চুপে আমীন পড়েছিলেন । [3]
অতএব উল্লেখিত সহীহ হাদীস দৃষ্টে হানাফীগণ চুপে চুপে আমীন বলে থাকেন । উপমহাদেশের সকল মুহাক্কিক আলিম ও মুফতীগণ এই আমল করে আসছেন ।

এক নজরে দেখে নেই নামাজের মাকরুহ সমুহ

  •                                             বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম

                                       পরম করুনময় আল্লাহর নাম সরন করি
                                                   সগ্রহকারি মোঃ রোকন সরকার



নিচের লেখা আমলগুলির যেকোন একটি আমল করলে নামাজ মাকরুহ হবে। অনেক ইমামের মতে, একই রোকনের মধ্যে তিনটি মাকরুহ আমল করলে নামাজ কবুল হয় না। হাদীছ অনুযায়ী এ নামাজ খুশুর নামাজ হবে না।
মাকরুহ্‌ ১
ইচ্ছা পূর্বক ওয়াজিব ও ছুন্নাত তরক করা।
মাকরুহ্‌ ২
নামাজের ভেতর আঙ্গুল মটকানো।
মাকরুহ্‌ ৩
এক হাতের আঙ্গুল অন্যহাতের আঙ্গুলের মধ্যে রেখে পাঞ্জা ধরার ন্যায় ধরা।
মাকরুহ্‌ ৪
নামাজের মধ্যে হাত দিয়ে কোমর ধরা।
মাকরুহ্‌ ৫
বিনা ওজরে কুকুরের মত দু’পা সামনে রেখে চোতরের উপর বসা। 
মাকরুহ্‌ ৬
তাশাহুদ অথবা ছেজদার সময় দু'গোড়ালীর উপর বসে হাত দিয়ে মাটিতে ভর করে বসা।
মাকরুহ্‌ ৭
পুরুষের ছেজদার সময় দু’হাত মাটিতে বিছিয়ে রাখা।
মাকরুহ্‌ ৮
জামা থাকা সত্বেও খালি গায়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৯
বিনা ওজরে আসন পেতে বসা।
মাকরুহ্‌ ১০
পুরুষের নামাজের মধ্যে এক হাতে মাথার চুল বাধা।
মাকরুহ্‌ ১১
মাথার মাঝখান ফাঁক রেখে রোমাল বেধে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ১২
মাথার মাঝখান ফাক রেখে পাগড়ী বাধা এবং সে অবস্থায় নামাজ পড়া। (আলমগীরী)
মাকরুহ্‌ ১৩
ছেজদার সময় এক হাতে সামনের বা পিছনের কাপড় টেনে ধরা।
মাকরুহ্‌ ১৪
মাথা বা ঘাড়ের দু’দিকে চাদর বা রোমাল ঝুলিয়ে দেয়া।
মাকরুহ্‌ ১৫
শুধু ডান কাধ বা শুধু বাম কাধের উপর কাপড় রেখে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ১৬
কেরাত শেষ না করে রুকুতে যাওয়া।
মাকরুহ্‌ ১৭
প্রথম রাকাত থেকে দ্বিতীয় রাকাতে কেরাত লম্বা করা।
মাকরুহ্‌ ১৮
ফরজ নামাজে এক রাকাতে একই ছুরা দু’বার পড়া।
মাকরুহ্‌ ১৯
প্রথম রাকাতে যে ছুরা পড়া হয় দ্বিতীয় রাকাতে তাঁর উপরের ছুরা পড়া।
মাকরুহ্‌ ২০
প্রতি রাকাতের জন্য ছুরা নির্দিষ্ট করা।
মাকরুহ্‌ ২১
প্রথম রাকাতে এক ছুরা পড়ার পর এক ছুরা বাদ দিয়ে পরের ছুরা পড়া।
মাকরুহ্‌ ২২
ইচ্ছা করে আতরের ঘ্রান নেয়া।
মাকরুহ্‌ ২৩
কাপড় বা পাখা দিয়ে বাতাস করা।
মাকরুহ্‌ ২৪
রুকুতে হাটুর উপর হাত না রাখা।
মাকরুহ্‌ ২৫
তাশাহুদের সময় ও দু'ছেজদার মধ্যে হাতের তালু হাটুর উপর রাখা।
মাকরুহ্‌ ২৬
কিয়ামের সময় বাম হাতের উপর ডান হাত না রাখা।
মাকরুহ্‌ ২৭
হাই তোলা।
মাকরুহ্‌ ২৮
বিনা কারণে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া। চোখ বন্ধ রাখলে যদি একাগ্রতা বেশী হয় তাহলে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়বে।
মাকরুহ্‌ ২৯
উপরের দিকে দৃষ্টি দেয়া।
মাকরুহ্‌ ৩০
যে কোন রোকন নিয়ম অপেক্ষা বেশী বিলম্ব করা।
মাকরুহ্‌ ৩১
কামড়ানোর আশংকা না থাকলে সাপ, বিচ্ছু, বোলতা, পিপড়া ইত্যাদী মারা। আশংকা থাকলে মারা মাকরুহ নয়।
মাকরুহ্‌ ৩২
কাপড় দিয়ে নাক মুখ বন্ধ করে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৩৩
মুখের মধ্যে কোন জিনিষ রেখে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৩৪
বিনা ওজরে শুধু কপাল দিয়ে ছেজদা করা।
মাকরুহ্‌ ৩৫
হাতের তালু সোজা রাখলে যে পরিমান পানি ধরে সে পরিমান নাপাকী নিয়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৩৬
পরিষ্কার কাপড় থাকা অবস্থায় ময়লা কাপড় পরে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৩৭
খালি মাথায় নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৩৮
নামাজের মধ্যে জোরে কান্না কাটি করা।
মাকরুহ্‌ ৩৯
ক্ষুধার সময় খাওয়া বাদ দিয়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৪০
আঙ্গুলের কর দিয়ে নামাজের মধ্যের আয়াত বা তছবীহ পড়ার হিসাব করা।
মাকরুহ্‌ ৪১
জীব জানোয়ারের ছবির উপর ছেজদা করা।
মাকরুহ্‌ ৪২
নামাজ পড়ার জায়গায় বা তার ডানে বামে সামনে জীব জানোয়ারের ছবি থাকলে সেখানে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৪৩
আগুন সামনে রেখে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৪৪
ঘুমান লোক সামনে রেখে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৪৫
কপালে ধুলা বালি লাগলে নামাজের মধ্যে তা মুছে ফেলা।
মাকরুহ্‌ ৪৬
উপযুক্ত ইমাম থাকতে অনুপুযুক্ত ইমামের পিছনে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৪৭
মুছুল্লিদের কষ্ট অবস্থায় ইমামের লম্বা ছুরা কেরাত পড়া।
মাকরুহ্‌ ৪৮
একাগ্রতা নষ্ট হয় এমন জিনিষ সামনে রেখে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৪৯
নামাজের সামনে লোক চলাচল করার অবস্থা থাকলে ছুতরা না দিয়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৫০
কাউকে সামনে রেখে তার মুখোমুখি ফিরে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৫১
মছজিদের মধ্যে কোন এক জায়গা নির্দিষ্ট করে সেখানে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৫২
জামাত শুরু হলে কাতারের মধ্যে দাড়িয়ে ব্যক্তিগত ফরজ নফল বা অন্য কোন নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৫৩
ছেজদার সময় হাত পায়ের আঙ্গুলগুলি কিবলার দিকে না রেখে অন্যদিকে রাখা।
মাকরুহ্‌ ৫৪
নিয়ত বাধার সময় হাত কানের লতি পর্যন্ত না উঠিয়ে ঘাড়ের নিচে বা কানের উপরে উঠান।
মাকরুহ্‌ ৫৫
ছেজদার সময় ইচ্ছা করে কাপড় দিয়ে পা ঢাকা অথবা কাপড় খুলে ফেলা।
মাকরুহ্‌ ৫৬
কিয়ামের মধ্যে ছেজদার যায়গা ছাড়া অন্য দিকে তাকান।
মাকরুহ্‌ ৫৭
কথাবার্তা বলছে এমন লোককে সামনে নিয়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৫৮
বিনা ওজরে রুকুর সময় হাটুর উপর হাত না রেখে জানুর উপর হাত রাখা।
মাকরুহ্‌ ৫৯
ছেজদার সময় মাটিতে হাত না রাখা অথবা ছেজদার সময় এক পা উচু করা।
মাকরুহ্‌ ৬০
ওজর থাকা সত্বেও জোরে কাশি দিলে বা গলা খাকরালে। বিনা ওজরে কাশলে বা গলা খাকরালে নামাজ ফাছেদ হবে।
মাকরুহ্‌ ৬১
বিনা ওজরে ছেজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে প্রথমে হাটু না রেখে হাত রাখলে অথবা ছেজদাহতে উঠার প্রথমে হাত না উঠিয়ে হাটু উঠালে।
মাকরুহ্‌ ৬২
রুকুর সময় মাথা পিঠ বরাবর সোজা না রেখে বেশী উচু করা বা বেশী নীচু করা।
মাকরুহ্‌ ৬৩
রুকুতে যাওয়ার পরে বা ছেজদায় যাওয়ার পরে তাকবীর বলা।
মাকরুহ্‌ ৬৪
আমিন ও বিছমিল্লাহ জোরে বলা।
মাকরুহ্‌ ৬৫
কোন লোককে নামাজে আসতে দেখে তার জন্যে ইমামের কেরাত বা রুকু লম্বা করা।
মাকরুহ্‌ ৬৬
ইমামের পিছনে মোকতাদির কেরাত পড়া।
মাকরুহ্‌ ৬৭
দু’কানে হাত উঠাবার সময় মাথা নিচু করা বা পিছনের দিকে ঘাড় বাকা করা অথবা দু’কাধের উপর হাত না উঠিয়ে তাকবীর বলা।
মাকরুহ্‌ ৬৮
ছেজদার সময় বগলের সাথে হাত মিশিয়ে দেয়া।
মাকরুহ্‌ ৬৯
ইমাম হাজির না থাকাবস্থায় ইকামাত বলে তার জন্যে দাড়িয়ে দেরী করা।
মাকরুহ্‌ ৭০
কাতারের পিছনে থেকে আল্লাহু আকবার বলে কাতারে ঢুকে পড়া।
মাকরুহ্‌ ৭১
বিনা ওজরে রুকু ছেজদার মধ্যে পিঠ সোজা না রাখা।
মাকরুহ্‌ ৭২
দাড়ান ও বসা অবস্থায় পিঠ সোজা না রাখা।
মাকরুহ্‌ ৭৩
জুমা, জোহর, আছরের নামাজে ইমামের ছেজদার আয়াত পড়া।
মাকরুহ্‌ ৭৪
বিনা ওজরে দেয়ালে বা অন্য কিছুর সঙ্গে টেক/হেলান দিয়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৭৫
বিনা ওজরে শরীর চুলকান বা শরীরের কাপড় ছেড়ে দেয়া।
মাকরুহ্‌ ৭৬
রুকু ছেজদার মধ্যে অথবা তাশাহুদ পড়ার মধ্যে কেরাত পড়া।
মাকরুহ্‌ ৭৭
ত্রিশুলের দিকে ফিরে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৭৮
ছেজদার জায়গা হতে পাথর বা ঢেলা সরান।
মাকরুহ্‌ ৭৯
দু’হাতের জামার হাতা গুটিয়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৮০
কাতারে ফাঁক থাকা অবস্থায় পিছনে দাড়ান। কাতারে ফাক না থাকলে জোর করে কাউকে সরিয়ে দিলে।
মাকরুহ্‌ ৮১
ইমাম একা একা উচু জায়গায় দাড়ালে।
মাকরুহ্‌ ৮২
নামাজের মধ্যে কপালের ধুলা বা ঘাম মুছে ফেলা।
মাকরুহ্‌ ৮৩
নামাজের মধ্যে থেকে থুথু ফেলা।
মাকরুহ্‌ ৮৪
ইমামের জোহর, মাগরিব, এশার যে কোন ফরজ নামাজ বাদে সেখান থেকে সরে না যেয়ে অন্য নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৮৫
ফজর ও আছর নামাজের ছালাম ফিরানোর পর ইমামের মোকতাদীর দিকে ফিরে না বসা।
মাকরুহ্‌ ৮৬
পেশাব পায়খানার বেগ নিয়ে নামাজ পড়া।
মাকরুহ্‌ ৮৭
নামাজের মধ্যে ছালাম ব্যতীত দু’দিকে মুখ ফিরান।
মাকরুহ্‌ ৮৮
রাস্তার উপর, গোছলের জায়গায়, পেশাব পায়খানার জায়গায়, নাপাক জিনিষের নিকটে ও কবর স্থানে নামাজ পড়া।

এক নজরে দেখে নেই নামাজ ভঙ্গের কারণ সমূহ

  •                                         বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম

                                       পরম করুনময় আল্লাহর নাম সরন করি
                                                   সগ্রহকারি মোঃ রোকন সরকার


নীচের বিষয় গুলির যে কোন একটি আমল করলে নামাজ ফাসেদ বা নষ্ট হয়ে যাবে। এ নামাজ পুণরায় আদায় করতে হবে।
কারণ ১
মাজুর ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্তে নতুন অজু করে সে অজু দিয়ে ঐ ওয়াক্তের ফরজ, ছুন্নাত ও নফল নামাজ পড়তে পারবে। এমন কি কোরআন তেলাওয়াত, দুরুদ বা জেকের আজকারও করতে পারবে। ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথে তার অজু ভেঙ্গে যাবে। সে আগের অজুতে অন্য ওয়াক্তের কোন নামাজ পড়বে না। পড়লে নামাজ আদায় হবে না।
কারণ ২
কোন ওয়াক্তের প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত পুরা সময় ওজরের অবস্থা প্রকাশ পেলে মাজুর হিসেবে গন্য হবে। যদি সম্পুর্ণ ওয়াক্ত ওজর প্রকাশ না পায় তবে মাজুর হিসেবে গণ্য হবে না। কোন ব্যক্তির জোহর ওয়াক্তের কিছু সময় চলে যাওয়ার পর ওজর প্রকাশ পেলে সে মাজুর হিসেবে অজু করে ঐ ওয়াক্তের নামাজ আদায় করবে। এরপর সম্পুর্ণ আছর ওয়াক্তের মধ্যে তার ওজর প্রকাশ না পেলে সে মাজুর হিসেবে গন্য হবে না। ফলে তার আগের জোহরের নামাজ যা সে মাজুর হিসেবে পড়েছিল, শরীয়তের হুকুম অনুযায়ী তা আদায় হবে না। এ কারণে পুনরায় জোহরের নামাজ কাজা আদায় করে নেবে। অন্য ওয়াক্তের বেলায়ও একই হুকুম।
কারণ ৩
ওজর না থাকা অবস্থায় অজু করার পর অন্য ওয়াক্তের বেলায় একই হুকুম। পুনরায় ওজর প্রকাশ পেলে ঐ অজুতে নামাজ হবে না। নামাজের জন্য পুনরায় অজু করতে হবে।
কারণ ৪
যদি ওজর বন্ধ করে নামাজ পড়া যায় তবে তা বন্ধ করে নামাজ পড়া ওয়াজেব। যেমনঃ যখম-পট্টি দিয়ে বন্ধ করা, এস্তেহাজা-কাপড় দিয়ে বন্ধ করা। যদি বন্ধ না করে নামাজ পড়ে তাহলে সে নামাজ আদায় হবে না।
কারণ ৫
নামাজের মধ্যে পট্টি শুকিয়ে পড়ে গেলে।
কারণ ৬
মাজুর অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর ওজর দুর হয়ে গেলে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৭
যদি কোন কাপড়ের অর্ধেক বা তার বেশী পরিমান অংশে নাপাকী লাগে। যদি অন্য কোন কাপড় থাকে তবে ঐ কাপড় পরে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ৮
মাঠে বা অন্য কোথাও নামাজ পড়ার ইচ্ছা করলে সেখানে নাপাকি ভিজা থাকলে তার উপর নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ৯
এমন শুকনা জায়গা যেখানে কাপড় বিছালে কাপড়ে জায়গার ছাপ লাগে এবং উহা নাপাকীযুক্ত হয় তবে উক্ত কাপড়েও নামাজ হবে না।
কারণ ১০
পথে ঘাটে বা মাঠে নামাজ পড়ার সময় যদি দুপায়ের নীচে (রূপার) এক গোল টাকা পরিমানের বেশী নাপাকী দেখা যায় তবে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১১
ছেজদার সময় দুহাটু ও দুহাতের নীচে নাপাকী থাকলে নামাজ হবে না।
কারণ ১২
দু'পায়ের নীচের এবং সেজদার স্থানের নাপাকী একসাথে মিলালে এক গোল টাকা পরিমানের বেশী হলে নামাজ ফাছেদ হবে। 
কারণ ১৩
কাপড় বিছিয়ে নামাজ পড়লে যদি দু’পাল্লা এক সাথে সেলাই থাকে তবে নীচের পাল্লায় নাপাক থাকলেও নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৪
নাপাকের ওপর বিছানা বিছিয়ে নামাজ পড়লে নাপাকের রং-গন্ধ পাওয়া গেলে নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৫
সেলাই বিহীন দোপাল্লার নিচের পাল্লায় নাপাক লাগলে নাপাকীর রং দেখলে বা গন্ধ পেলে নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৬
নাপাক জায়গা বা বিছানার উপর পাতলা কাপড় বিছালে যদি নাপাক দেখা যায় বা গন্ধ বোঝা যায় তবে নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৭
স্ত্রীলোকের দু'কান দু'অংগ, দু’স্তন দু'অংগ, দু'হাত দু'অংগ, মলদ্বার আলাদা একটি অংগ। পেশাবের দুদ্বার দু'অংগ, পিঠ এক অংগ, পেট এক অংগ, রান এক অংগ, হাটু থেকে পায়ের নলা পর্যন্ত এক অংগ। নামাজের মধ্যে তিনবার ‘ছুবহানাল্লাহ’ পড়া পরিমাণ সময় কোন এক অংগের চার ভাগের এক ভাগের বেশী আলগা হয়ে গেলে নামাজ ফাছেদ বা নষ্ট হবে। এমন কি দু’তিন অংগ এক সাথে আলগা হয়ে গেলে সব মিলিয়ে উহাদের ছোট অংগটির চার ভাগের এক ভাগের বেশী হলে এবং তা তিন তছবিহ পড়া পরিমান সময় আলগা থাকলে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১৮
যদি কাপড় এমন পাতলা হয় যা পরার পরেও শরীর দেখা যায় তবে ঐ কাপড় পরে নামাজ পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১৯
মেয়েদের ছেড়ে দেয়া চুলের চার ভাগের একভাগ কাপড়ের বাইরে বের হলে নামাজ ফাছেদ হবে। খোপা বাধা চুলের চার ভাগের একভাগ বের হলেও নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ২০
অন্ধকার রাত্রিতে কেবলার দিক ঠিক করতে না পারলে নিকটে স্থানীয় লোক থাকা অবস্থায় তাদের কাছে জিজ্ঞাসা না করে নিজ ইচ্ছায় কেবলা ঠিক করে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ২১
বিনা চিন্তা ভাবনায় খেয়াল খুশী মত কেবলা মনে করে নামাজ পড়বেন না। পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ২২
কোন নামাজ পড়ছে যদি চিন্তা ছাড়া সে উত্তর দিতে না পারে তাহলে তার নামাজই হবে না।
কারণ ২৩
ক্বলব বা অন্তরে নিয়েত না করে শুধু মুখে উচ্চারণ করলে নামাজ হবে না।
কারণ ২৪
মোকতাদী হলে ইমামের পিছনে একতেদা অর্থাৎ আমি ইমামের পিছনে নামাজ পড়ছি, নিয়েত করুন। মোকতাদী নিয়েত না করলে নামাজ হবে না।
কারণ ২৫
মেয়েলোক মোকতাদী হলে ইমাম অবশ্যই মেয়েলোকের ইমামতির নিয়েত করবে। ইমাম মেয়েদের ইমামতির নিয়েত না করলে মেয়েদের নামাজ হবে না।
কারণ ২৬
মেয়ে মোক্তাদী ইমামের পাশে দাড়ালে আড়াল করুন। না করলে সকলের নামাজ ফাছেদ হবে। পুরুষ মোক্তাদীর পাশে মেয়ে মোক্তাদী দাড়ালে আড়াল করুন। তা না হলে উভয় মোকতাদীর নামাজ বাতেল হবে। 
কারণ ২৭
নিয়েত তাকবীরে তাহরীমার আগে করুন। তাকবীরে তাহরীমা বাধার পরে নিয়েত করলে নামাজ হবে না। ২৮। ওয়াক্তের আগে নামাজ পড়লে সে নামাজ আদায় হবে না। ওয়াক্ত হওয়ার পরে পুনরায় পড়তে হবে।
২৯। কথা বললে।
কারণ ৩০
বাইরের কোন কথা বা শব্দ কান পেতে শুনলে।
কারণ ৩১
মানুষের কাছে যে সব জিনিষ চাওয়া হয় আল্লাহর কাছে তা চাইলে।
কারণ ৩২
ছালাম করলে।
কারণ ৩৩
ছালামের উত্তর দিলে।
কারণ ৩৪
সরিষা পরিমাণ বাহিরের কোন জিনিষ মুখে দিলে।
কারণ ৩৫
দাঁতের ফাকে বেধে থাকা খাদ্য বুট পরিমাণ চিবাইলে অথবা খেয়ে ফেললে।
কারণ ৩৬
কিছু পান করলে।
কারণ ৩৭
বিনা কারণে গলা খাকরাইলে।
কারণ ৩৮
আহ্ উহ্ শব্দ করলে।
কারণ ৩৯
দুঃখ বা জ্বালা যন্ত্রণার কারণে শব্দ করে কাঁদলে।
কারণ ৪০
হাঁচির উত্তরে ইয়ারহামুকুমুল্লাহ বললে।
কারণ ৪১
কোন প্রশ্নের উত্তরে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললে।
কারণ ৪২
দুঃসংবাদ শুনে ইন্না লিল্লাহ বললে।
কারণ ৪৩
সু সংবাদ শুনে আল হামদুলিল্লাহ বললে।
কারণ ৪৪
আশ্চর্য সংবাদ শুনে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বা ছুবহানাল্লাহ বললে।
কারণ ৪৫
কোন লোকের প্রশ্নের উত্তরে কোন রকম শব্দ করলে।
কারণ ৪৬
কাপড় অভাবে উলঙ্গ হয়ে নামাজ পড়া শুরু করার পর কাপড় পেলে।
কারণ ৪৭
তরতীব ওয়ালা কাজা নামাজ (অর্থাৎ এক সাথে ১/২ ওয়াক্ত হতে একাধারে ৫ ওয়াক্ত পর্যন্ত কাজা নামাজ) বাকী আছে মনে হলে।
কারণ ৪৮
নিজ ইচ্ছায় অজু ভঙ্গ করলে। যেমন কোন জায়গায় চুলকিয়ে রক্ত বের করলে।
কারণ ৪৯
অন্যের দ্বারা অজু নষ্ট হলে। যেমন কারো আঘাতের কারণে রক্ত বের হলে।
কারণ ৫০
বেহুশ হলে।
কারণ ৫১
পাগল হলে।
কারণ ৫২
গোছল ফরজ হলে।
কারণ ৫৩
এক নামাজ শেষ না হতে অন্য নামাজের তাকবীর বললে।
কারণ ৫৪
রুকু বা ছেজদা পরিমাণ সময় অথবা বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পড়া সময় পরিমাণ উলঙ্গ হলে।
কারণ ৫৫
এক ভরি ওজন বা এক গোল টাকা পরিমাণ জিনিষ এক রোকন আদায় করা পর্যন্ত সময় হাতে বা পায়ে থাকলে। নামাজের মধ্যে যে কাজগুলি করা ফরজ,যেমন কেয়াম, কেরাত, রুকু, ছেজদা এর এক একটিকে এক রোকন বলা হয়)।
কারণ ৫৬
ঘুমাইলে।
কারণ ৫৭
পাথর বা লাঠি দিয়ে কাউকে আঘাত করলে।
কারণ ৫৮
কুফরী মূলক চিন্তা ভাবনা করলে।
কারণ ৫৯
কোন রোকন ছেড়ে দিলে।
কারণ ৬০
কোন আহকাম ছেড়ে দিলে। যেমন অজু, ছতর ঢাকা, কেবলার দিকে মুখ করা ইত্যাদি।
কারণ ৬১
তন্দ্রা অবস্থায় উচ্চস্বরে হাসলে।
কারণ ৬২
হজ্জের সময় নামাজের মধ্যে লাব্বাইক বললে।
কারণ ৬৩
নবী পাক (ছাঃ) এর নাম শুনে ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অছল্লাম বললে।
কারণ ৬৪
মুখের মধ্যের কোন দ্রব্য গলে পেটের ভিতর গেলে।
কারণ ৬৫
মাথায় বা দাড়িতে তেল ব্যবহার করলে।
কারণ ৬৬
হাত-পা দিয়ে শব্দ লিখলে।
কারণ ৬৭
সুরমা বা আতর ব্যবহার করলে।
কারণ ৬৮
একই রোকনের মধ্যে এক কাজ তিন বার করলে। যেমন কোন জায়গায় তিনবার চুলকালে।
কারণ ৬৯
আমলে কাছির করলে। অর্থাৎ যে কাজ দেখলে লোকে তাকে নামাজী মনে না করে।
কারণ ৭০
পাগড়ী বাধলে বা স্ত্রীলোক মাথায় রুমাল বাধলে।
কারণ ৭১
জামার বোতাম লাগালে।
কারণ ৭২
জামা, চাদর বা মোজা পরলে।
কারণ ৭৩
রুকু বা ছেজদার সময় দুহাতে কাপড় বা জামা টেনে ধরলে বা উচু করলে।
কারণ ৭৪
ফোস ফোস শব্দ করলে।
কারণ ৭৫
কারো হুকুমে কোন কাজ করলে। যেমন কেউ বললো, ’সামনে এগিয়ে যাও‘। তার হুকুম অনুযায়ী এগিয়ে গেলে।
কারণ ৭৬
দুহাত দিয়ে কোন কাজ করলে।
কারণ ৭৭
বুক ঘুরিয়ে দেখলে।
কারণ ৭৮
একই রোকনের মধ্যে তিনটা মাকরুহ আমল করলে নামাজ ফাছেদ বা নষ্ট হয়ে যাবে যদি লোকে দেখলে তাকে নামাজী মনে না করে।
কারণ ৭৯
আল হামদুর ‘হা’ এর জায়গায় ওয়াও এর পরের ‘হা’ উচ্চারণ করবেন না। আলামিনের ‘আইন’ এর জায়গায় ‘আলিফ’ উচ্চারণ করবেন না।
ইহদিনা’র হা’ ডাবল উচ্চারণ করবেন না। আনআমতা’র ‘তা’ স্পষ্ট করে পড়ুন। ভুলে ‘তু’ পড়বেন না। পড়লে এসব জায়গায় অর্থের পরিবর্তন হবে ও নামাজ হবে না।
কারণ ৮০
ইয়্যাকা না’ বুদুও অ ইয়্যাকা নাছতায়ীন এই দু শব্দের তাশদীদ বাদ দিয়ে পড়লে, রব্বিল আলামিনের ‘বা’ এর তাশদীদ উচ্চরণ না করলে অধিকাংশ ইমামের মতে নামাজ ফাছেদ হবে। (আলমগীরি)
কারণ ৮১
একা একা নামাজ পড়লে নামাজের মধ্যে বাইরের কেরাত শুনে কেরাত শিখবেন না। শিখলে নামাজ নষ্ট হবে।
কারণ ৮২
লিখিত কেরাত দেখে পড়বেন না। পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৩
কেরাতের কোন জায়গায় লম্বা সুরে পড়লে যদি অর্থের পরিবর্তন হয়, অক্ষর উচ্চারণের পরিবর্তনের ফলে যদি অর্থের ও পরিবর্তন হয় অথবা জের, জবর, পেশকে গানের সুরে টেনে পড়লে যেমন রব্বিল এর ‘বা’ র জবরকে মদ/লম্বা করে পড়লে নামাজ বাতিল হবে। (গায়াতুল আওতার)
কারণ ৮৪
মদ ও লীনের হরফ গুলি নিয়মের চেয়ে বেশী লম্বা করে পড়লে অর্থ পরিবর্তন না হলেও নামাজ ফাছেদ হবে। ওয়াও ছাকিনের আগের অক্ষরে পেশ, আলিফ ছাকিনের আগের অক্ষরে জবর ও ইয়া ছাকিনের আগের অক্ষরে জের হলে তাকে মদ বলে। মদের স্থানে টেনে পড়তে হবে। ওয়াও ছাকিন বা ইয়া ছাকিনের আগের অক্ষরে জবর হলে তাকে লীন বলে। লীনের স্থানেও টেনে পড়তে হবে। (মেছবাহুল কোরআন)
কারণ ৮৫
এক নামাজী অন্য নামাজীর অলাদ- দ্বল্লীন পড়া শুনে আমিন পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৬
কেরাতের মধ্যে কোরআন মাজীদের আয়াত ছাড়া অন্য কোন দোয়া-কালাম পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৭
ফজর, জোহর, আছর, মাগরীব ও এশার ফরজ নামাজের প্রথম দু’রাকাতের প্রতি রাকাতে ছোট তিন আয়াত অথবা লম্বা এক আয়াত পরিমাণ পড়া ফরজ। না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৮
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ছুন্নাত, নফল ও বেতেরের প্রত্যেক রাকাতে কেরাত পড়া ফরজ। এ কেরাত না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৯
ফজর, মাগরীব ও এশার ফরজ নামাজের প্রথম দু’রাকাতে দুই ঈদের নামাজে, তারাবী ও রমজান মাসের বেতের নামাজের প্রত্যেক রাকাতে ইমামের জেহেরী কেরাত অর্থাৎ কেরাত জোরে পড়া ওয়াজিব। ইচ্ছা করে চুপে চুপে পড়লে ।
কারণ ৯০
মাগরিবের ফরজ নামাজের ৩য় রাকাতে এশার ফরজ নামাজের ৩য়, ৪র্থ রাকাতে জোহর, আসর, বেতের এবং দিনের ছুন্নাত ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতে কেরাত আস্তে পড়া ওয়াজিব। ইচ্ছাকরে তিন শব্দের বেশী জোরে পড়লে।
কারণ ৯১
মছজিদের মধ্যে নামাজ অবস্থায় অজু নষ্ট হয়েছে মনে করে মছজিদের বাইরে গেলে।
কারণ ৯২
মছজিদের বাইরে নামাজ পাঠকারী অজু নষ্ট হয়েছে মনে করে কাতার থেকে অথবা একাকী নামাজী নামাজের জায়গা থেকে সরে গেলে।
কারণ ৯৩
অজু অবস্থায় নামাজ শুরু করে ওজু নেই মনে করে কাতার থেকে সরে গেলে ।
কারণ ৯৪
তরতীবওয়ালা নামাজ অর্থাৎ একাধারে এক ওয়াক্ত হতে পাঁচ ওয়াক্ত কাজা নামাজ বাকী আছে মনে করে দাড়ান জায়গা থেকে সরে গেলে।
কারণ ৯৫
রুকু হ'তে মাথা সোজাভাবে না উঠিয়ে ছেজদায় গেলে রুকু আদায় হবে না
কারণ ৯৬
ছেজদার সময় দু’পা এক সঙ্গে মাটির উপরে উঠে গেলে।
কারণ ৯৭
প্রথম ছেজদা দিয়ে মাথা সোজা না তুলে পুনরায় ছেজদা দিলে নামাজ হবে না।
কারণ ৯৮
দুই ছেজদার স্থানে এক ছেজদা দিলে নামাজ বাতিল হবে।
কারণ ৯৯
ফু দিয়ে অথবা দু’হাত দিয়ে ছেজদার স্থানের ধুলা বালি সরালে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০০
ছেজদার সময় নাক ও কপাল নরম জায়গায় বসে গেলে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০১
তৃতীয় রাকাতেও কেরাত পড়া ফরজ। না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০২
যদি কোন রাকাতে ছুরা ফাতেহা বা অন্য কোন ছুরা কেরাত না পড়ে থাকেন তবে কেরাত পড়া ফরজ রোকন আদায় না হওয়ার ফলে নামাজ হবে না। এ নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। ছেজদা শেষে উঠে বসুন।
কারণ ১০৩
ইমাম মিষ্টস্বরে শুনাবার জন্য সুর করে বা ভাব ভঙ্গী দিয়ে নামাজীর মন আকৃষ্ট করার জন্য কেরাত পড়লে তার পিছনে নামাজ হবেনা।
কারণ ১০৪
ইমামের কেরাত পড়ার স্পষ্ট উচ্চারণ মোকতাদী শুনতে ও বুঝতে না পারলেও নামাজ হবে না। কারণ কেরাত পড়া ফরজ। তাই তারতীল অর্থাৎ পড়ার সঠিক নিয়ম কানুন অনুযায়ী কেরাত না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০৫
ফরজ নামাজ দুই তিন বা চার রাকাত হ'লে কেবলমাত্র দু’রাকতে কেরাত পড়া ফরজ। এক রাকাতে কেরাত পড়লে ফরজ আদায় না হওয়ার কারণে নামাজ হবেনা। (আলমগীরী)
কারণ ১০৬
মোকতাদীর পায়ের গিরা ইমামের আগে গেলে।
কারণ ১০৭
ইমাম মেহরাবের মধ্যে দাড়ালে কারো নামাজ হবে না।
কারণ ১০৮
ইমাম উপস্থিত থাকা অবস্থায় তার চেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি বা অন্য কেউ তার অনুমতি ছাড়া ইমামতি করলে।
কারণ ১০৯
যারা কোরআনকে বিশ্বাস করে না ।
কারণ ১১০
যারা রছুলে পাককে শেষ নবী বলে স্বীকার করে না।
কারণ ১১১
পুরুষ লোক মেয়েদের ইমামতি করলে নিয়েত করার সময়ে মেয়েদের ইমামতির নিয়েত করবে। নিয়েত পরে করলে মেয়েদের নামাজ হবে না। নিয়েত করার সময় মেয়েদের জামাতে হাজির হওয়া শর্ত নয়।(আলমগীরী)
কারণ ১১২
ইমাম অনুপযুক্ত মোকতাদীকে খলিফা করলে।
কারণ ১১৩
মোকতাদী ইমাম ব্যতীত অন্যের ভুলের জন্যে লোকমা দিলে।
কারণ ১১৪
নামাজের ভিতর ইমাম মারা গেলে মোকতাদীর নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১১৫
নামাজীর মন আকৃষ্ট করার জন্যে ইমাম মিষ্টস্বর সুর করে বা ভাব-ভঙ্গি দিয়ে কেরাত পড়লে তার পিছনে নামাজ হবে না।
কারণ ১১৬
ইমামের কেরাত পড়ার স্পষ্ট উচ্চারণ মোকতাদী শুনতে ও বুঝতে না পারলে নামাজ হবে না। কারণ কেরাত পড়া ফরজ। তাই পড়ার সঠিক নিয়ম অনুযায়ী কেরাত না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১১৭
নাবালেগ ইমামের পিছনে নামাজ পড়লে আদায় হবে না। কারণ নাবালেগ বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালকের উপর শরীয়ত নাই।
কারণ ১১৮
রুকু ছেজদা ইমামের আগে হলে।
কারণ ১১৯
দাড়নোর সময় মাথা সোজা না করে ছেজদায় গেলে।
কারণ ১২০
ইমাম ছেজদায় যাওয়ার আগে মোকতাদী ছেজদা করলে।
কারণ ১২১
কেবল নাক বা শুধুমাত্র কপাল মাটিতে রাখলে ছেজদা আদায় হবে না।
কারণ ১২২
এক সাথে দু’পা উঠে গেলে।
কারণ ১২৩
ইমাম চতুর্থ রাকাতে না বসে ভুলে পঞ্চম রাকাতের জন্য দাড়িয়ে গেলে মোকতাদী লোকমা দেবে। যদি ইমাম না বসে তবে মোকতাদী না দাড়িয়ে বসে তাশাহুদ পড়ে ছালাম ফিরাবে। যদি ইমাম পঞ্চম রাকাতের ছেজদার আগে বসে ছালাম ফিরায় তবে উক্ত মোকতাদীর নামাজ আদায় হবে। আর যদি ইমাম বসে ছালাম না ফিরিয়ে পঞ্চম রাকাতের ছেজদা করে তবে ইমাম আখেরী ক্সবঠক ফরজ রোকন আদায় না করার কারণে সকলের নামাজ ফাছেদ হবে।(আলমগীরী)
কারণ ১২৪
ইমাম রুকুতে গেলে দাড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বাঁধুন। তারপর রুকুতে যান। তাহরীমা বাঁধতে বাঁধতে রুকুতে গেলে নামাজ হবে না।
কারণ ১২৫
ইমাম বা একাকী নামাজী আখেরী ক্সবঠকে না বসে সোজা উঠে দাড়ালে।
কারণ ১২৬
আখেরী বৈঠকের আত্তাহিয়্যাতু শেষে ছোহ ছেজদা করার পর না বসে হঠাৎ দাড়িয়ে গেলে।
কারণ ১২৭
ইমামের ডান দিকে ছালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে আপনি দাড়িয়ে যাওয়ার পর ইমামকে ছোহ ছেজদা দিতে দেখলে পুনরায় বসে ছোহ ছেজদা দিলে।
কারণ ১২৮
আখেরী ক্সবঠক শেষে ইমাম উচ্চ শব্দে হাসলে বা ইচ্ছা করে অজু ভাঙলে মছবুকের নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১২৯
বসে রুকুর সময় মাথা ঝুকিয়ে দিন। মাথা এমনভাবে ঝুকান যেন হাটুর বাইরে না যায়। হাটুর বাইরে গেলে রুকু হবে না। বরং ছেজদা হিসেবে গণ্য হবে ও নামাজ হবে না। (শামী)
কারণ ১৩০
লাহেক অজু করতে যাওয়ার সময় কেরাত পড়লে বা কথাবার্তা বললে।
কারণ ১৩১
নিকটে পানি দেখে দুরে অজু করতে গেলে।
কারণ ১৩২
বিনা ওজরে এক রোকন পরিমাণ সময় দেরি করে অজু করতে গেলে।
কারণ ১৩৩
মেয়েদের অজু নষ্ট হলে বাকী নামাজ আদায়ের আগে অজুর জন্য হাত, পা বা অন্য কোন অঙ্গ হতে কাপড় সরে গেলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কেননা নামাজের মধ্যে হাত ঢেকে রাখাও ফরজ। এ কারণে অজু করে পুনরায় নামাজ পড়বে।
কারণ ১৩৪
যদি ফজরের নামাজ কাজা হয়ে যায় এবং জোহর, আছর বা মাগরিবে উক্ত ফজরের নামাজ না পড়ে এশার সময় আদায় করতে চান তবে ফজর, জোহর, আছর ও মাগরিব ধারাবাহিকভাবে পড়ে নিন। কেননা পুর্বের পড়া জোহর, আছর ও মাগরিবের নামাজ ধারাবাহিকতা না থাকায় বাতিল বলে গণ্য হবে।
কারণ ১৩৫
নামাজ শুরু করার পর তরতীব ওয়ালা কাজা নামাজের কথা মনে হলে।
কারণ ১৩৬
কাজা বাকী আছে মনে করে দাড়ানো স্থান থেকে সরে গেলেও।
কারণ ১৩৭
মুছাফির ব্যক্তির মনে থাকা অবস্থায় দু’রাকাত এর স্থলে চার রাকাত নামাজ পড়লে।নীচের বিষয় গুলির যে কোন একটি আমল করলে নামাজ ফাসেদ বা নষ্ট হয়ে যাবে। এ নামাজ পুণরায় আদায় করতে হবে।
কারণ ১
মাজুর ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্তে নতুন অজু করে সে অজু দিয়ে ঐ ওয়াক্তের ফরজ, ছুন্নাত ও নফল নামাজ পড়তে পারবে। এমন কি কোরআন তেলাওয়াত, দুরুদ বা জেকের আজকারও করতে পারবে। ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথে তার অজু ভেঙ্গে যাবে। সে আগের অজুতে অন্য ওয়াক্তের কোন নামাজ পড়বে না। পড়লে নামাজ আদায় হবে না।
কারণ ২
কোন ওয়াক্তের প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত পুরা সময় ওজরের অবস্থা প্রকাশ পেলে মাজুর হিসেবে গন্য হবে। যদি সম্পুর্ণ ওয়াক্ত ওজর প্রকাশ না পায় তবে মাজুর হিসেবে গণ্য হবে না। কোন ব্যক্তির জোহর ওয়াক্তের কিছু সময় চলে যাওয়ার পর ওজর প্রকাশ পেলে সে মাজুর হিসেবে অজু করে ঐ ওয়াক্তের নামাজ আদায় করবে। এরপর সম্পুর্ণ আছর ওয়াক্তের মধ্যে তার ওজর প্রকাশ না পেলে সে মাজুর হিসেবে গন্য হবে না। ফলে তার আগের জোহরের নামাজ যা সে মাজুর হিসেবে পড়েছিল, শরীয়তের হুকুম অনুযায়ী তা আদায় হবে না। এ কারণে পুনরায় জোহরের নামাজ কাজা আদায় করে নেবে। অন্য ওয়াক্তের বেলায়ও একই হুকুম।
কারণ ৩
ওজর না থাকা অবস্থায় অজু করার পর অন্য ওয়াক্তের বেলায় একই হুকুম। পুনরায় ওজর প্রকাশ পেলে ঐ অজুতে নামাজ হবে না। নামাজের জন্য পুনরায় অজু করতে হবে।
কারণ ৪
যদি ওজর বন্ধ করে নামাজ পড়া যায় তবে তা বন্ধ করে নামাজ পড়া ওয়াজেব। যেমনঃ যখম-পট্টি দিয়ে বন্ধ করা, এস্তেহাজা-কাপড় দিয়ে বন্ধ করা। যদি বন্ধ না করে নামাজ পড়ে তাহলে সে নামাজ আদায় হবে না।
কারণ ৫
নামাজের মধ্যে পট্টি শুকিয়ে পড়ে গেলে।
কারণ ৬
মাজুর অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর ওজর দুর হয়ে গেলে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৭
যদি কোন কাপড়ের অর্ধেক বা তার বেশী পরিমান অংশে নাপাকী লাগে। যদি অন্য কোন কাপড় থাকে তবে ঐ কাপড় পরে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ৮
মাঠে বা অন্য কোথাও নামাজ পড়ার ইচ্ছা করলে সেখানে নাপাকি ভিজা থাকলে তার উপর নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ৯
এমন শুকনা জায়গা যেখানে কাপড় বিছালে কাপড়ে জায়গার ছাপ লাগে এবং উহা নাপাকীযুক্ত হয় তবে উক্ত কাপড়েও নামাজ হবে না।
কারণ ১০
পথে ঘাটে বা মাঠে নামাজ পড়ার সময় যদি দুপায়ের নীচে (রূপার) এক গোল টাকা পরিমানের বেশী নাপাকী দেখা যায় তবে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১১
ছেজদার সময় দুহাটু ও দুহাতের নীচে নাপাকী থাকলে নামাজ হবে না।
কারণ ১২
দু'পায়ের নীচের এবং সেজদার স্থানের নাপাকী একসাথে মিলালে এক গোল টাকা পরিমানের বেশী হলে নামাজ ফাছেদ হবে। 
কারণ ১৩
কাপড় বিছিয়ে নামাজ পড়লে যদি দু’পাল্লা এক সাথে সেলাই থাকে তবে নীচের পাল্লায় নাপাক থাকলেও নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৪
নাপাকের ওপর বিছানা বিছিয়ে নামাজ পড়লে নাপাকের রং-গন্ধ পাওয়া গেলে নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৫
সেলাই বিহীন দোপাল্লার নিচের পাল্লায় নাপাক লাগলে নাপাকীর রং দেখলে বা গন্ধ পেলে নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৬
নাপাক জায়গা বা বিছানার উপর পাতলা কাপড় বিছালে যদি নাপাক দেখা যায় বা গন্ধ বোঝা যায় তবে নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১৭
স্ত্রীলোকের দু'কান দু'অংগ, দু’স্তন দু'অংগ, দু'হাত দু'অংগ, মলদ্বার আলাদা একটি অংগ। পেশাবের দুদ্বার দু'অংগ, পিঠ এক অংগ, পেট এক অংগ, রান এক অংগ, হাটু থেকে পায়ের নলা পর্যন্ত এক অংগ। নামাজের মধ্যে তিনবার ‘ছুবহানাল্লাহ’ পড়া পরিমাণ সময় কোন এক অংগের চার ভাগের এক ভাগের বেশী আলগা হয়ে গেলে নামাজ ফাছেদ বা নষ্ট হবে। এমন কি দু’তিন অংগ এক সাথে আলগা হয়ে গেলে সব মিলিয়ে উহাদের ছোট অংগটির চার ভাগের এক ভাগের বেশী হলে এবং তা তিন তছবিহ পড়া পরিমান সময় আলগা থাকলে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১৮
যদি কাপড় এমন পাতলা হয় যা পরার পরেও শরীর দেখা যায় তবে ঐ কাপড় পরে নামাজ পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১৯
মেয়েদের ছেড়ে দেয়া চুলের চার ভাগের একভাগ কাপড়ের বাইরে বের হলে নামাজ ফাছেদ হবে। খোপা বাধা চুলের চার ভাগের একভাগ বের হলেও নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ২০
অন্ধকার রাত্রিতে কেবলার দিক ঠিক করতে না পারলে নিকটে স্থানীয় লোক থাকা অবস্থায় তাদের কাছে জিজ্ঞাসা না করে নিজ ইচ্ছায় কেবলা ঠিক করে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ২১
বিনা চিন্তা ভাবনায় খেয়াল খুশী মত কেবলা মনে করে নামাজ পড়বেন না। পড়লে নামাজ হবে না।
কারণ ২২
কোন নামাজ পড়ছে যদি চিন্তা ছাড়া সে উত্তর দিতে না পারে তাহলে তার নামাজই হবে না।
কারণ ২৩
ক্বলব বা অন্তরে নিয়েত না করে শুধু মুখে উচ্চারণ করলে নামাজ হবে না।
কারণ ২৪
মোকতাদী হলে ইমামের পিছনে একতেদা অর্থাৎ আমি ইমামের পিছনে নামাজ পড়ছি, নিয়েত করুন। মোকতাদী নিয়েত না করলে নামাজ হবে না।
কারণ ২৫
মেয়েলোক মোকতাদী হলে ইমাম অবশ্যই মেয়েলোকের ইমামতির নিয়েত করবে। ইমাম মেয়েদের ইমামতির নিয়েত না করলে মেয়েদের নামাজ হবে না।
কারণ ২৬
মেয়ে মোক্তাদী ইমামের পাশে দাড়ালে আড়াল করুন। না করলে সকলের নামাজ ফাছেদ হবে। পুরুষ মোক্তাদীর পাশে মেয়ে মোক্তাদী দাড়ালে আড়াল করুন। তা না হলে উভয় মোকতাদীর নামাজ বাতেল হবে। 
কারণ ২৭
নিয়েত তাকবীরে তাহরীমার আগে করুন। তাকবীরে তাহরীমা বাধার পরে নিয়েত করলে নামাজ হবে না। ২৮। ওয়াক্তের আগে নামাজ পড়লে সে নামাজ আদায় হবে না। ওয়াক্ত হওয়ার পরে পুনরায় পড়তে হবে।
২৯। কথা বললে।
কারণ ৩০
বাইরের কোন কথা বা শব্দ কান পেতে শুনলে।
কারণ ৩১
মানুষের কাছে যে সব জিনিষ চাওয়া হয় আল্লাহর কাছে তা চাইলে।
কারণ ৩২
ছালাম করলে।
কারণ ৩৩
ছালামের উত্তর দিলে।
কারণ ৩৪
সরিষা পরিমাণ বাহিরের কোন জিনিষ মুখে দিলে।
কারণ ৩৫
দাঁতের ফাকে বেধে থাকা খাদ্য বুট পরিমাণ চিবাইলে অথবা খেয়ে ফেললে।
কারণ ৩৬
কিছু পান করলে।
কারণ ৩৭
বিনা কারণে গলা খাকরাইলে।
কারণ ৩৮
আহ্ উহ্ শব্দ করলে।
কারণ ৩৯
দুঃখ বা জ্বালা যন্ত্রণার কারণে শব্দ করে কাঁদলে।
কারণ ৪০
হাঁচির উত্তরে ইয়ারহামুকুমুল্লাহ বললে।
কারণ ৪১
কোন প্রশ্নের উত্তরে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললে।
কারণ ৪২
দুঃসংবাদ শুনে ইন্না লিল্লাহ বললে।
কারণ ৪৩
সু সংবাদ শুনে আল হামদুলিল্লাহ বললে।
কারণ ৪৪
আশ্চর্য সংবাদ শুনে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বা ছুবহানাল্লাহ বললে।
কারণ ৪৫
কোন লোকের প্রশ্নের উত্তরে কোন রকম শব্দ করলে।
কারণ ৪৬
কাপড় অভাবে উলঙ্গ হয়ে নামাজ পড়া শুরু করার পর কাপড় পেলে।
কারণ ৪৭
তরতীব ওয়ালা কাজা নামাজ (অর্থাৎ এক সাথে ১/২ ওয়াক্ত হতে একাধারে ৫ ওয়াক্ত পর্যন্ত কাজা নামাজ) বাকী আছে মনে হলে।
কারণ ৪৮
নিজ ইচ্ছায় অজু ভঙ্গ করলে। যেমন কোন জায়গায় চুলকিয়ে রক্ত বের করলে।
কারণ ৪৯
অন্যের দ্বারা অজু নষ্ট হলে। যেমন কারো আঘাতের কারণে রক্ত বের হলে।
কারণ ৫০
বেহুশ হলে।
কারণ ৫১
পাগল হলে।
কারণ ৫২
গোছল ফরজ হলে।
কারণ ৫৩
এক নামাজ শেষ না হতে অন্য নামাজের তাকবীর বললে।
কারণ ৫৪
রুকু বা ছেজদা পরিমাণ সময় অথবা বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পড়া সময় পরিমাণ উলঙ্গ হলে।
কারণ ৫৫
এক ভরি ওজন বা এক গোল টাকা পরিমাণ জিনিষ এক রোকন আদায় করা পর্যন্ত সময় হাতে বা পায়ে থাকলে। নামাজের মধ্যে যে কাজগুলি করা ফরজ,যেমন কেয়াম, কেরাত, রুকু, ছেজদা এর এক একটিকে এক রোকন বলা হয়)।
কারণ ৫৬
ঘুমাইলে।
কারণ ৫৭
পাথর বা লাঠি দিয়ে কাউকে আঘাত করলে।
কারণ ৫৮
কুফরী মূলক চিন্তা ভাবনা করলে।
কারণ ৫৯
কোন রোকন ছেড়ে দিলে।
কারণ ৬০
কোন আহকাম ছেড়ে দিলে। যেমন অজু, ছতর ঢাকা, কেবলার দিকে মুখ করা ইত্যাদি।
কারণ ৬১
তন্দ্রা অবস্থায় উচ্চস্বরে হাসলে।
কারণ ৬২
হজ্জের সময় নামাজের মধ্যে লাব্বাইক বললে।
কারণ ৬৩
নবী পাক (ছাঃ) এর নাম শুনে ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অছল্লাম বললে।
কারণ ৬৪
মুখের মধ্যের কোন দ্রব্য গলে পেটের ভিতর গেলে।
কারণ ৬৫
মাথায় বা দাড়িতে তেল ব্যবহার করলে।
কারণ ৬৬
হাত-পা দিয়ে শব্দ লিখলে।
কারণ ৬৭
সুরমা বা আতর ব্যবহার করলে।
কারণ ৬৮
একই রোকনের মধ্যে এক কাজ তিন বার করলে। যেমন কোন জায়গায় তিনবার চুলকালে।
কারণ ৬৯
আমলে কাছির করলে। অর্থাৎ যে কাজ দেখলে লোকে তাকে নামাজী মনে না করে।
কারণ ৭০
পাগড়ী বাধলে বা স্ত্রীলোক মাথায় রুমাল বাধলে।
কারণ ৭১
জামার বোতাম লাগালে।
কারণ ৭২
জামা, চাদর বা মোজা পরলে।
কারণ ৭৩
রুকু বা ছেজদার সময় দুহাতে কাপড় বা জামা টেনে ধরলে বা উচু করলে।
কারণ ৭৪
ফোস ফোস শব্দ করলে।
কারণ ৭৫
কারো হুকুমে কোন কাজ করলে। যেমন কেউ বললো, ’সামনে এগিয়ে যাও‘। তার হুকুম অনুযায়ী এগিয়ে গেলে।
কারণ ৭৬
দুহাত দিয়ে কোন কাজ করলে।
কারণ ৭৭
বুক ঘুরিয়ে দেখলে।
কারণ ৭৮
একই রোকনের মধ্যে তিনটা মাকরুহ আমল করলে নামাজ ফাছেদ বা নষ্ট হয়ে যাবে যদি লোকে দেখলে তাকে নামাজী মনে না করে।
কারণ ৭৯
আল হামদুর ‘হা’ এর জায়গায় ওয়াও এর পরের ‘হা’ উচ্চারণ করবেন না। আলামিনের ‘আইন’ এর জায়গায় ‘আলিফ’ উচ্চারণ করবেন না।
ইহদিনা’র হা’ ডাবল উচ্চারণ করবেন না। আনআমতা’র ‘তা’ স্পষ্ট করে পড়ুন। ভুলে ‘তু’ পড়বেন না। পড়লে এসব জায়গায় অর্থের পরিবর্তন হবে ও নামাজ হবে না।
কারণ ৮০
ইয়্যাকা না’ বুদুও অ ইয়্যাকা নাছতায়ীন এই দু শব্দের তাশদীদ বাদ দিয়ে পড়লে, রব্বিল আলামিনের ‘বা’ এর তাশদীদ উচ্চরণ না করলে অধিকাংশ ইমামের মতে নামাজ ফাছেদ হবে। (আলমগীরি)
কারণ ৮১
একা একা নামাজ পড়লে নামাজের মধ্যে বাইরের কেরাত শুনে কেরাত শিখবেন না। শিখলে নামাজ নষ্ট হবে।
কারণ ৮২
লিখিত কেরাত দেখে পড়বেন না। পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৩
কেরাতের কোন জায়গায় লম্বা সুরে পড়লে যদি অর্থের পরিবর্তন হয়, অক্ষর উচ্চারণের পরিবর্তনের ফলে যদি অর্থের ও পরিবর্তন হয় অথবা জের, জবর, পেশকে গানের সুরে টেনে পড়লে যেমন রব্বিল এর ‘বা’ র জবরকে মদ/লম্বা করে পড়লে নামাজ বাতিল হবে। (গায়াতুল আওতার)
কারণ ৮৪
মদ ও লীনের হরফ গুলি নিয়মের চেয়ে বেশী লম্বা করে পড়লে অর্থ পরিবর্তন না হলেও নামাজ ফাছেদ হবে। ওয়াও ছাকিনের আগের অক্ষরে পেশ, আলিফ ছাকিনের আগের অক্ষরে জবর ও ইয়া ছাকিনের আগের অক্ষরে জের হলে তাকে মদ বলে। মদের স্থানে টেনে পড়তে হবে। ওয়াও ছাকিন বা ইয়া ছাকিনের আগের অক্ষরে জবর হলে তাকে লীন বলে। লীনের স্থানেও টেনে পড়তে হবে। (মেছবাহুল কোরআন)
কারণ ৮৫
এক নামাজী অন্য নামাজীর অলাদ- দ্বল্লীন পড়া শুনে আমিন পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৬
কেরাতের মধ্যে কোরআন মাজীদের আয়াত ছাড়া অন্য কোন দোয়া-কালাম পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৭
ফজর, জোহর, আছর, মাগরীব ও এশার ফরজ নামাজের প্রথম দু’রাকাতের প্রতি রাকাতে ছোট তিন আয়াত অথবা লম্বা এক আয়াত পরিমাণ পড়া ফরজ। না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৮
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ছুন্নাত, নফল ও বেতেরের প্রত্যেক রাকাতে কেরাত পড়া ফরজ। এ কেরাত না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ৮৯
ফজর, মাগরীব ও এশার ফরজ নামাজের প্রথম দু’রাকাতে দুই ঈদের নামাজে, তারাবী ও রমজান মাসের বেতের নামাজের প্রত্যেক রাকাতে ইমামের জেহেরী কেরাত অর্থাৎ কেরাত জোরে পড়া ওয়াজিব। ইচ্ছা করে চুপে চুপে পড়লে ।
কারণ ৯০
মাগরিবের ফরজ নামাজের ৩য় রাকাতে এশার ফরজ নামাজের ৩য়, ৪র্থ রাকাতে জোহর, আসর, বেতের এবং দিনের ছুন্নাত ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতে কেরাত আস্তে পড়া ওয়াজিব। ইচ্ছাকরে তিন শব্দের বেশী জোরে পড়লে।
কারণ ৯১
মছজিদের মধ্যে নামাজ অবস্থায় অজু নষ্ট হয়েছে মনে করে মছজিদের বাইরে গেলে।
কারণ ৯২
মছজিদের বাইরে নামাজ পাঠকারী অজু নষ্ট হয়েছে মনে করে কাতার থেকে অথবা একাকী নামাজী নামাজের জায়গা থেকে সরে গেলে।
কারণ ৯৩
অজু অবস্থায় নামাজ শুরু করে ওজু নেই মনে করে কাতার থেকে সরে গেলে ।
কারণ ৯৪
তরতীবওয়ালা নামাজ অর্থাৎ একাধারে এক ওয়াক্ত হতে পাঁচ ওয়াক্ত কাজা নামাজ বাকী আছে মনে করে দাড়ান জায়গা থেকে সরে গেলে।
কারণ ৯৫
রুকু হ'তে মাথা সোজাভাবে না উঠিয়ে ছেজদায় গেলে রুকু আদায় হবে না
কারণ ৯৬
ছেজদার সময় দু’পা এক সঙ্গে মাটির উপরে উঠে গেলে।
কারণ ৯৭
প্রথম ছেজদা দিয়ে মাথা সোজা না তুলে পুনরায় ছেজদা দিলে নামাজ হবে না।
কারণ ৯৮
দুই ছেজদার স্থানে এক ছেজদা দিলে নামাজ বাতিল হবে।
কারণ ৯৯
ফু দিয়ে অথবা দু’হাত দিয়ে ছেজদার স্থানের ধুলা বালি সরালে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০০
ছেজদার সময় নাক ও কপাল নরম জায়গায় বসে গেলে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০১
তৃতীয় রাকাতেও কেরাত পড়া ফরজ। না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০২
যদি কোন রাকাতে ছুরা ফাতেহা বা অন্য কোন ছুরা কেরাত না পড়ে থাকেন তবে কেরাত পড়া ফরজ রোকন আদায় না হওয়ার ফলে নামাজ হবে না। এ নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। ছেজদা শেষে উঠে বসুন।
কারণ ১০৩
ইমাম মিষ্টস্বরে শুনাবার জন্য সুর করে বা ভাব ভঙ্গী দিয়ে নামাজীর মন আকৃষ্ট করার জন্য কেরাত পড়লে তার পিছনে নামাজ হবেনা।
কারণ ১০৪
ইমামের কেরাত পড়ার স্পষ্ট উচ্চারণ মোকতাদী শুনতে ও বুঝতে না পারলেও নামাজ হবে না। কারণ কেরাত পড়া ফরজ। তাই তারতীল অর্থাৎ পড়ার সঠিক নিয়ম কানুন অনুযায়ী কেরাত না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১০৫
ফরজ নামাজ দুই তিন বা চার রাকাত হ'লে কেবলমাত্র দু’রাকতে কেরাত পড়া ফরজ। এক রাকাতে কেরাত পড়লে ফরজ আদায় না হওয়ার কারণে নামাজ হবেনা। (আলমগীরী)
কারণ ১০৬
মোকতাদীর পায়ের গিরা ইমামের আগে গেলে।
কারণ ১০৭
ইমাম মেহরাবের মধ্যে দাড়ালে কারো নামাজ হবে না।
কারণ ১০৮
ইমাম উপস্থিত থাকা অবস্থায় তার চেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি বা অন্য কেউ তার অনুমতি ছাড়া ইমামতি করলে।
কারণ ১০৯
যারা কোরআনকে বিশ্বাস করে না ।
কারণ ১১০
যারা রছুলে পাককে শেষ নবী বলে স্বীকার করে না।
কারণ ১১১
পুরুষ লোক মেয়েদের ইমামতি করলে নিয়েত করার সময়ে মেয়েদের ইমামতির নিয়েত করবে। নিয়েত পরে করলে মেয়েদের নামাজ হবে না। নিয়েত করার সময় মেয়েদের জামাতে হাজির হওয়া শর্ত নয়।(আলমগীরী)
কারণ ১১২
ইমাম অনুপযুক্ত মোকতাদীকে খলিফা করলে।
কারণ ১১৩
মোকতাদী ইমাম ব্যতীত অন্যের ভুলের জন্যে লোকমা দিলে।
কারণ ১১৪
নামাজের ভিতর ইমাম মারা গেলে মোকতাদীর নামাজ বাতেল হবে।
কারণ ১১৫
নামাজীর মন আকৃষ্ট করার জন্যে ইমাম মিষ্টস্বর সুর করে বা ভাব-ভঙ্গি দিয়ে কেরাত পড়লে তার পিছনে নামাজ হবে না।
কারণ ১১৬
ইমামের কেরাত পড়ার স্পষ্ট উচ্চারণ মোকতাদী শুনতে ও বুঝতে না পারলে নামাজ হবে না। কারণ কেরাত পড়া ফরজ। তাই পড়ার সঠিক নিয়ম অনুযায়ী কেরাত না পড়লে নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১১৭
নাবালেগ ইমামের পিছনে নামাজ পড়লে আদায় হবে না। কারণ নাবালেগ বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালকের উপর শরীয়ত নাই।
কারণ ১১৮
রুকু ছেজদা ইমামের আগে হলে।
কারণ ১১৯
দাড়নোর সময় মাথা সোজা না করে ছেজদায় গেলে।
কারণ ১২০
ইমাম ছেজদায় যাওয়ার আগে মোকতাদী ছেজদা করলে।
কারণ ১২১
কেবল নাক বা শুধুমাত্র কপাল মাটিতে রাখলে ছেজদা আদায় হবে না।
কারণ ১২২
এক সাথে দু’পা উঠে গেলে।
কারণ ১২৩
ইমাম চতুর্থ রাকাতে না বসে ভুলে পঞ্চম রাকাতের জন্য দাড়িয়ে গেলে মোকতাদী লোকমা দেবে। যদি ইমাম না বসে তবে মোকতাদী না দাড়িয়ে বসে তাশাহুদ পড়ে ছালাম ফিরাবে। যদি ইমাম পঞ্চম রাকাতের ছেজদার আগে বসে ছালাম ফিরায় তবে উক্ত মোকতাদীর নামাজ আদায় হবে। আর যদি ইমাম বসে ছালাম না ফিরিয়ে পঞ্চম রাকাতের ছেজদা করে তবে ইমাম আখেরী ক্সবঠক ফরজ রোকন আদায় না করার কারণে সকলের নামাজ ফাছেদ হবে।(আলমগীরী)
কারণ ১২৪
ইমাম রুকুতে গেলে দাড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বাঁধুন। তারপর রুকুতে যান। তাহরীমা বাঁধতে বাঁধতে রুকুতে গেলে নামাজ হবে না।
কারণ ১২৫
ইমাম বা একাকী নামাজী আখেরী ক্সবঠকে না বসে সোজা উঠে দাড়ালে।
কারণ ১২৬
আখেরী বৈঠকের আত্তাহিয়্যাতু শেষে ছোহ ছেজদা করার পর না বসে হঠাৎ দাড়িয়ে গেলে।
কারণ ১২৭
ইমামের ডান দিকে ছালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে আপনি দাড়িয়ে যাওয়ার পর ইমামকে ছোহ ছেজদা দিতে দেখলে পুনরায় বসে ছোহ ছেজদা দিলে।
কারণ ১২৮
আখেরী ক্সবঠক শেষে ইমাম উচ্চ শব্দে হাসলে বা ইচ্ছা করে অজু ভাঙলে মছবুকের নামাজ ফাছেদ হবে।
কারণ ১২৯
বসে রুকুর সময় মাথা ঝুকিয়ে দিন। মাথা এমনভাবে ঝুকান যেন হাটুর বাইরে না যায়। হাটুর বাইরে গেলে রুকু হবে না। বরং ছেজদা হিসেবে গণ্য হবে ও নামাজ হবে না। (শামী)
কারণ ১৩০
লাহেক অজু করতে যাওয়ার সময় কেরাত পড়লে বা কথাবার্তা বললে।
কারণ ১৩১
নিকটে পানি দেখে দুরে অজু করতে গেলে।
কারণ ১৩২
বিনা ওজরে এক রোকন পরিমাণ সময় দেরি করে অজু করতে গেলে।
কারণ ১৩৩
মেয়েদের অজু নষ্ট হলে বাকী নামাজ আদায়ের আগে অজুর জন্য হাত, পা বা অন্য কোন অঙ্গ হতে কাপড় সরে গেলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কেননা নামাজের মধ্যে হাত ঢেকে রাখাও ফরজ। এ কারণে অজু করে পুনরায় নামাজ পড়বে।
কারণ ১৩৪
যদি ফজরের নামাজ কাজা হয়ে যায় এবং জোহর, আছর বা মাগরিবে উক্ত ফজরের নামাজ না পড়ে এশার সময় আদায় করতে চান তবে ফজর, জোহর, আছর ও মাগরিব ধারাবাহিকভাবে পড়ে নিন। কেননা পুর্বের পড়া জোহর, আছর ও মাগরিবের নামাজ ধারাবাহিকতা না থাকায় বাতিল বলে গণ্য হবে।
কারণ ১৩৫
নামাজ শুরু করার পর তরতীব ওয়ালা কাজা নামাজের কথা মনে হলে।
কারণ ১৩৬
কাজা বাকী আছে মনে করে দাড়ানো স্থান থেকে সরে গেলেও।
কারণ ১৩৭
মুছাফির ব্যক্তির মনে থাকা অবস্থায় দু’রাকাত এর স্থলে চার রাকাত নামাজ পড়লে।
ভালো লাগলে কমেন্ট করুন।

সুরা: ইয়াসিন আরবি & বাংলা উচ্চারণ

সুরা: ইয়াসিন بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ আরবি & বাংলা উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম (পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল...